পত্রিকায় ইন্টারভিউ

মুক্তিযোদ্ধার তালিকা চরমভাবে বিতর্কিত

বাংলাদেশে যে কয়েকজন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে গবেষণা করেন তাদের মধ্যে সালেক খোকন অন্যতম। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষণা ছাড়াও লেখক হিসেবে বেশ জনপ্রিয় তিনি। সম্প্রতি সময়ের আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তুলে ধরেছেন মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নানা দিক। কথা বলেছেন মুক্তিযোদ্ধার তালিকা নিয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নিজস্ব প্রতিবেদক আব্দুল কাইয়ুম

সময়ের আলো : মহান বিজয় দিবস সম্পর্কে আপনার মতামত কি?

সালেক খোকন : ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস আমাদের রাষ্ট্রের জন্য বড় বিষয়। ১৯৭১ সালে আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদরা আত্মত্যাগের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে তা স্মরণ রাখতে হবে। এই দিনে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে যা একটি বড় ঘটনা। আমাদের জাতীয় জীবনে ও রাষ্ট্রীয়ভাবে দিবসটি পালনের ক্ষেত্রে বড় একটি বিষয়। এটি মূলত একটি রাষ্ট্রীয় দিবস, কোন রাজনৈতিক অনুষ্ঠান নয়।

বর্তমান প্রজন্ম ১৯৭১ সালের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে কতটুকু জানে বলে মনে করেন?

বর্তমান প্রজন্ম ১৯৭১ সালের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে কতটুকু জানে তা গবেষণা করলে বলা যেত। এটুকু বলতে পারি আমি আশাহত না। এই প্রজন্ম অনেক কিছুই জানে। কারণ এখন তো জানার অনেক মাধ্যম রয়েছে। আগে বই পড়ে জানতে হলেও এখন জানার জায়গাটা অনেক সহজ হয়ে গেছে। আমি বিশ্বাস করি তারা ইচ্ছা করলে জানতে পারে। মূল কথা হচ্ছে স্বাধীনতার ৫৩-৫৪ বছরে তরুণ প্রজন্মকে কতটুকু জানাতে পেয়েছি। এই জায়গায় আমাদের দুর্বলতা অথবা অতিরঞ্জন ছিল ফলে সঠিকভাবে জানাতে পারেনি। তাদের জানানোর যেসব প্রক্রিয়া যথাযথ ছিল না।

সময়ের আলো, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিভিন্নভাবে বিকৃত করা হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। আপনার মতামত কী?

এটি সত্যি যে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত অনেক বিকৃত হয়েছে। তা ছাড়া অতিরঞ্জন হয়েছে। অতিরঞ্জনও এক ধরনের বিকৃতি। প্রতিটা সরকার এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। তবে ইতিহাসকে কখনো বিকৃত করা যায় না। শুধু ঘটনাকে পাল্টানো যায়। আমি যে কথা বলব তার বিপরীতে তথ্য-উপাত্ত থাকলেই গ্রহণযোগ্য হবে। যথেষ্ট প্রমাণ নিয়ে কথা বললে সবাই তা গ্রহণ করবে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের মধ্যে রাজনৈতিক বিষয়গুলো যুক্ত হওয়াতে প্রত্যেকের মতো ইতিহাস তৈরি করেছে। পৃথিবীর একমাত্র বাংলাদেশ যেখানে স্বাধীনতার বিরোধীরা রাজনীতি করার বৈধতা পেয়েছে। অনেকে একাত্তরে স্বাধীনতার বিপক্ষে কাজ করছে অথচ এখন সব সুযোগ-সুবিধা ও রাজনীতি করছে। এগুলো চলতে থাকলে ইতিহাসের বিকৃতির ঘটনা ঘটতে থাকবে। কারণ তাদেরকে আমরাই সুযোগ তৈরি করে দিয়েছি। তা ছাড়া ইতিহাসে রাজনৈতিক ব্যবহার হয়েছে। আমরা প্রজন্মের কাছে সঠিক ইতিহাসকে তুলে ধরতে পারিনি। এ ক্ষেত্রে আমরা অনেকটা পিছিয়ে আছি।

মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা নিয়ে অনেকেই দ্বিমত পোষণ করছে। কেউ বলছেন এখন যারা আছেন তারা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। সেটিকে কীভাবে দেখছেন?

এটি অস্বীকার করার উপায় নেই মুক্তিযোদ্ধার তালিকা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। প্রতিটি সরকার তার শাসনামলে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা বৃদ্ধি করেছে। যদি বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধাদের আর কোনো সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে না, তা হলে আবেদনের সংখ্যা অনেকটাই কমে যাবে। শুধু সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার জন্য নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা হওয়া ইচ্ছা পোষণ করছে। তবে কিছু রাজনৈতিক ধ্যান-ধারণাও রয়েছে। অনেকেই এই সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে অনেক রাজাকার, আলবদর ও স্বাধীনতার বিরোধীরা রয়েছে। যা অনেক গণমাধ্যমেও অনেক উঠে এসেছে। এসব কারণে মুক্তিযুদ্ধের তালিকা নিয়ে চরমভাবে বিতর্কিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নীতিনির্ধারকদের বড় ধরনের একটা ভূমিকা ছিল। এটি সব আমলেই হয়েছে, নির্দিষ্ট কোন সময় হয়েছে তা কিন্তু নয়। তাই আমার মতে নতুন করে তালিকা করার বিষয়টি বন্ধ রাখা জরুরি। যেগুলোতে বিতর্ক রয়েছে যাচাই-বাছাই করে একটি নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসা উচিত। তবে যাচাই-বাছাইও যেন সঠিকভাবে হয়। স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বড় কাজ হওয়ার কথা ছিল যুদ্ধাপরাধীদের তালিকা করা। তখন এই তালিকা খুব সহজে করা যেত কিন্তু তা করা হয়নি। পরে অনেক উদ্যোগ নিলেও তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। এতে করে অনেক মুক্তিযোদ্ধার নামও স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকায় চলে গেছে। বর্তমান সরকারও বলেছে, তারা রাজাকারদের তালিকা জানে না তাই কতটা উদ্যোগ নিতে পারবে তা পরিষ্কার নয়।

১৯৭১ সালের যুদ্ধে কোন শ্রেণির মানুষের অবদান সবচেয়ে বেশি ছিল বলে মনে করেন?

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের ক্ষেত্রে কোন শ্রেণির অবদান সবচেয়ে বেশি ছিল তা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা খুবই কঠিন। কারণ এটি ছিল গণযুদ্ধ। তবে যারা ডিফেন্সে কাজ করত তাদেরও একটা বড় অবদান ছিল। তারা চাকরি থেকে বের হয়ে সাধারণ মানুষকে প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করে। তবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারীর বেশিরভাগই ছিল সাধারণ মানুষ, ছাত্র সমাজ, যুবক ও কৃষক। তাদের পাশাপাশি নারীদের ভূমিকা কম ছিল না। পাকিস্তানিরা শক্তিতে অনেক বেশি থাকলেও এ দেশের মানুষ তাদের পছন্দ করত না। ফলে বিভিন্ন সময় পাকিস্তানিরা কিছু করতে চাইলে সাধারণ মানুষ মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে তথ্য ফাঁস করে দিত। এসব মানুষই মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার, থাকার জায়গা এবং অস্ত্র বহন করে অন্য জায়গায় নিয়ে দিত। সাধারণ মানুষের এই শক্তিটা স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। এতে করে পাকিস্তানিরা সাধারণ মানুষকেই বিশ্বাস করত না। তাই স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের যেমন অবদান আছে তেমনি সাধারণ মানুষের অবদানও কম নয়।

সময়ের আলো, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

মুক্তিযোদ্ধাদের যেসব সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে তা যথেষ্ট মনে করেন?

মুক্তিযোদ্ধারা এখন যেসব ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন তা তাদের জন্য সম্মানজনক। তা ছাড়া তাদের চিকিৎসাসেবা ও বাড়ি করে দেওয়া হচ্ছে। তবে তাদের প্রতি মানুষের ভালোবাসাটা কমে গেছে। তাদের যেভাবে সম্মানিত করা প্রয়োজন সেভাবেই করা উচিত। কারণ টাকা দিয়ে সবকিছু করা যায় না। তাদের যাই দিই না কেন, তা যেন সম্মানের সঙ্গে হয়। যাতে বোঝা যায় বীর মুক্তিযোদ্ধাকে দেওয়া হচ্ছে। সেই জায়গাটা এখন নেই। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকতেই পারে কিন্তু সম্মানের জায়গায় সবাই সমান। তাদের আরও কীভাবে সম্মানিত করা যায় সে বিষয় নিয়ে রাষ্ট্র ভাবতে পারে।

আপনি অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে আলাপ, সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। তাদের সম্পর্কে আপনার উপলব্ধি কি? মুক্তিযোদ্ধারা কি সন্তুষ্ট নাকি তাদের মধ্যে কোনো ক্ষোভ আছে?

আমি ২৫০ জনের বেশি মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে কথা বলেছি। যদি সার্বিকভাবে বলতে হয়, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্য কি ছিল-দেশ থেকে শত্রু মুক্ত করা, শেখ মুজিবরের মুক্তি এবং একটি দেশকে স্বাধীন করা। যেখানে কোনো পাকিস্তানি থাকবে না। স্বাধীনতা লাভের পর তারা আত্মতৃপ্তি পেয়েছে। তারা সফল হয়েছে এ ক্ষেত্রে কোনো দ্বিমত নেই। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা চেয়েছিল একটি বৈষম্যহীন সার্বজনীন রাষ্ট্র। আমরা স্বাধীনতা লাভ করলেও এখনও মুক্তি পাইনি। আমি যখনই তাদের প্রশ্ন করি আপনি কেমন বাংলাদেশ দেখতে চান? তারা একটাই উত্তর দেন, এই দেশকে অসাম্প্রদায়িক হিসেবে দেখতে চাই। তারা দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ এবং একাত্তরের চেতনা উদ্বুদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চান। এই দেশে মনুষ্যত্ব প্রতিষ্ঠা পায় এমনটাই আশা করে। তারা কোন ধরনের বাংলাদেশ চান সরকার কোনো দিন তা জানতে চাননি। যদিও আমরা বলি ৩০ লাখ শহিদ হয়েছে কিন্তু স্বাধীনতার এত বছর পরেও শহিদের তালিকা করা উদ্যোগ কেন এখনও নেওয়া হয়নি। ১৯৭১ সালে গণহত্যার শিকার অসহায় পরিবারকে খুঁজে বের করে সহযোগিতা করা খুবই জরুরি। তা ছাড়া তাদের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দিয়ে শহিদের মর্যাদা দিলে খুব বেশি কষ্ট হতো না। কিন্তু কোনো সরকার তা করেনি। বিভিন্ন দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের সামনে আনলেও গণহত্যায় নিহত পরিবারকে আনা হয় না। এসব শহিদ পরিবার রাষ্ট্রীয় ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা পায় না। তাদের এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় স্বীকৃত দেওয়া হয়নি। সেই পরিবারের কেউ বলতেও পারেন না একাত্তরে গণহত্যার শিকার হয়েছিল। বলতে গেলেই সনদ দেখতে চায়। এখন মুক্তিযোদ্ধা মানে তার সার্টিফিকেট থাকতেই হবে।

গবেষণা করতে গিয়ে এমন কোনো ঘটনা আছে কি, যা আপানাকে ব্যথিত ভুলতে দেয়নি। তা ছাড়া বিভিন্ন বিষয় থাকতে মুক্তিযুদ্ধের গবেষণা নিয়েই কেন কাজ করে যাচ্ছেন?

আমি ২০০৮ সাল থেকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয় নিয়ে কাজটা শুরু করি। মূলত একটি ঘটনা আমাকে বেশি অনুপ্রাণিত করেছে। ব্যক্তিগত কাজে দিনাজপুরের বিরল উপজেলায় গিয়েছিলাম। সেখানে একটি জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে গিয়ে কৃষ্ণ কিশোর দাস নামের এক মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে দেখা হয়। যুদ্ধের সময় মাইনের আঘাতে তার একটি পা উড়ে যায়। একাত্তরের পরবর্তী সময়ে সরকার তাকে কাঠমিস্ত্রির কাজ শিখিয়েছিল। তারপর থেকে তিনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাঠমিস্ত্রির কাজ করতেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দাওয়াত পেলেও তাদের কথা গণমাধ্যমে প্রকাশ হয় না বলে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। পত্রিকায় এমপি-মন্ত্রীরা কি বলেছে তা ছাপা হয় কিন্তু বীর মুক্তিযোদ্ধারা কি বলতে চাচ্ছে তা বলা হয় না। তার এই কথাটা আমার হৃদয়কে স্পর্শ করে। সেদিনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমি নিজ উদ্যোগে মুক্তিযোদ্ধাদের কথা জানতে চাইব। আমি তালিকা ধরে কাজ করি না কারণ তালিকায় বিতর্ক থাকতে পারে। তাই একজন থেকে অন্যজনের খোঁজ নিয়ে বের করতে লাগলাম। আমার আর্থিক সীমাবদ্ধতা থাকার পরেও কাজ চালিয়ে গেছি। কাজের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো সাহায্য-সহযোগিতা আমি কখনো পাইনি বা আবেদন করিনি। রাষ্ট্র আমাকে সহযোগিতা করুক তা চাই না তবে আমার কাজগুলোকে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিলেই হবে। সবচেয়ে বেশি আনন্দ লাগে যখন তৃণমূলের একজন মুক্তিযোদ্ধার কথা গণমাধ্যমে তুলে ধরতে পারে পারি। এতে করে সাধারণ মানুষ সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারে। আর সেই মুক্তিযোদ্ধাও যথাযথ সম্মান পায়।

মুক্তিযুদ্ধের বাইরে আর কি কি বিষয় নিয়ে কাজ করা হয়?

আমি মুক্তিযুদ্ধ ও আদিবাসী নিয়ে গবেষণা করছি। মুক্তিযুদ্ধের আগে থেকেই আদিবাসীদের জাতিসত্তা নিয়ে কাজ করতাম। তাদের টিকে থাকার লড়াই, সাহিত্য নিয়ে কাজ আছে। লেখার পাশাপাশি আলোকচিত্রে নানা ঘটনা তুলে আনতে ‘পাঠশালা’ ও ‘কাউন্টার ফটো’ থেকে সমাপ্ত করেছি ফটোগ্রাফির বিশেষ কোর্স। আমি সবসময় স্বপ্ন দেখি মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী এবং দেশের কৃষ্টি নিয়ে ভিন্ন ধরনের তথ্য ও গবেষণামূলক কাজ করতে।

 

দেশ দেশের মানুষের উদ্দেশে কিছু বলতে চান? আগামীতে কোন ধরনের বাংলাদেশকে দেখতে চান?

একটি জিনিসই বলব, একাত্তর হচ্ছে আমাদের শিকড়। তখন দেশকে বাঁচাতে ৩০ লাখ শহিদ হয়েছে আর বীর মুক্তিযোদ্ধারা ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। আপামর জনসাধারণ কষ্ট করে, সংগ্রাম ও লড়াই করে এই দেশকে স্বাধীন করেছে। স্বাধীনতার এই ইতিহাসকে ভুলে গেলে চলবে না। ইতিহাস নিয়ে রাজনীতি করা যাবে না। একাত্তরকে যেন কোনো রাজনৈতিক বিশ্লেষণে মুছে ফেলার চেষ্টা না করা হয়। এটিকে ধারণ করেই পরবর্তী বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হবে। আগামীতে আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চাই। যেই বাংলাদেশে অন্যায়-অবিচার থাকবে না।

আপনার সাহিত্য চর্চা নিয়ে যদি কিছু বলতেন?

আমার এখন পর্যন্ত ৩৫টি প্রকাশ করতে পেরেছি। এর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বই ১৫টি, আদিবাসীবিষয়ক বই ১৪টি, ভ্রমণবিষয়ক বই ১টি এবং শিশুতোষ বই ৫টি। আমি আসলে পাঠকের জন্য কাজ করছি। সম্পূর্ণ কাজ নিরপেক্ষভাবে করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে পাঠকই বলতে পারবে তা কতটা নিরপেক্ষ। আমি কখনো সুবিধাভোগের জন্য ইতিহাসের কাজ করতে চাইনি। শেষ পর্যন্ত এই গবেষণার কাজ চালিয়ে যেতে চাই।

ইন্টারভিউটি প্রকাশিত হয়েছে দৈনিক সময়ের আলোতে, প্রকাশকাল: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

© 2024, https:.

এই ওয়েবসাইটটি কপিরাইট আইনে নিবন্ধিত। নিবন্ধন নং: 14864-copr । সাইটটিতে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো তথ্য, সংবাদ, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Show More

Salek Khokon

সালেক খোকনের জন্ম ঢাকায়। পৈতৃক ভিটে ঢাকার বাড্ডা থানাধীন বড় বেরাইদে। কিন্তু তাঁর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ঢাকার কাফরুলে। ঢাকা শহরেই বেড়ে ওঠা, শিক্ষা ও কর্মজীবন। ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর। ছোটবেলা থেকেই ঝোঁক সংস্কৃতির প্রতি। নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। যুক্ত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও থিয়েটারের সঙ্গেও। তাঁর রচিত ‘যুদ্ধদিনের গদ্য ও প্রামাণ্য’ গ্রন্থটি ২০১৫ সালে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক মৌলিক গবেষণা গ্রন্থ হিসেবে ‘কালি ও কলম’পুরস্কার লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী ও ভ্রমণবিষয়ক লেখায় আগ্রহ বেশি। নিয়মিত লিখছেন দেশের প্রথম সারির দৈনিক, সাপ্তাহিক, ব্লগ এবং অনলাইন পত্রিকায়। লেখার পাশাপাশি আলোকচিত্রে নানা ঘটনা তুলে আনতে ‘পাঠশালা’ ও ‘কাউন্টার ফটো’ থেকে সমাপ্ত করেছেন ফটোগ্রাফির বিশেষ কোর্স। স্বপ্ন দেখেন মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী এবং দেশের কৃষ্টি নিয়ে ভিন্ন ধরনের তথ্য ও গবেষণামূলক কাজ করার। সহধর্মিণী তানিয়া আক্তার মিমি এবং দুই মেয়ে পৃথা প্রণোদনা ও আদিবা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back to top button