আদিবাসী

কারাম উৎসবের অন্তরালগদ্য

সমতলের আদিবাসীদের সবচেয়ে বড় উৎসবের নাম কারমা বা কারাম। কড়ারা এটিকে কারমা উৎসব বললেও অন্যান্যদের কাছে এটি কারাম উৎসব। এ উৎসব পালিত হয় প্রতি ভাদ্রের পূর্ণিমার চাঁদে। বিরল প্রজাতির ‘খিল কদম’ গাছের ডাল কেটে এনে বিশেষ আচারের মাধ্যমে এ উৎসবটি পালন করা হয়। আদিবাসীদের কাছে এই গাছটি অতি পবিত্র। কেন এই উৎসব আয়োজন? এমনটাই প্রশ্ন ছিল দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইকুড়ি গ্রামের কড়াদের গোত্রপ্রধান জগেন কড়ার কাছে। উত্তরের পুরোটাই মিলেমিশে রূপ নেয় চমৎকার এক গদ্যে।

‘কারাম আর ধারাম দুই ভাই। কারাম বড়। ধারাম ছোট। পারাবেতী তাদের একমাত্র বোন। ভাদ্র মাসে একবার গ্রামের এক ধনী ব্যক্তি ঢোল পিটিয়ে তার জমিতে হাউলি’র (ধান গাড়ার) ডাক দেয়। অন্যদের সঙ্গে কারাম-ধারামও যায় সেখানে। কাজ শুরু হয় খুব ভোরে। কিছু চারা লাগানোর পরেই সকালের নাস্তা বা পানতার ডাক পড়ে। দু’ভাই তখন কলা পাতা বিছিয়ে বসে যায় লাইনে। কিন্তু তাদের কাছে এসেই তা শেষ হয়ে যায়। পানতা না পেয়ে বড়ই দুঃখ পায় তারা। নিজেকে সামলে নিয়ে দুপুরে খাবারের আশায় আবার তারা কাজে ফেরে। কিন্তু এবারও ঘটে একই ঘটনা। কাছাকাছি এসেই খাবার শেষ! ব্যথিত হয় দুইভাই। রাগে-কষ্টে তারা তাদের হাতে লাগানো রোয়া তুলে ফেলতে রওনা দেয়।

পথেই ছিল একটি বটগাছ। দুঃখের কারণ জানতে চাইলে—দুইভাই বটগাছকে সব খুলে বলে। সব শুনে বটগাছ বলে, “তোদের কারমা কপাল জেড় গেলে’ (তোদের কর্মভাগ্য পুড়ে গেছে)। সাত সমুদ্র লংকা পার হয়ে আনতে হবে সে কর্মভাগ্যকে।”
বটগাছের কথায় কারাম-ধারামও রওনা হয় সে পথে।

পথেই তাদের সঙ্গে দেখা হয় একটি কুল গাছের। কারাম-ধারামের কথা শুনে সেও জানায় তার দুঃখের কথাটি। তার ফল পেকে মাটিতে পড়ে থাকে কিন্তু কেউ সে ফল খায় না। তার ভাগ্যটিও জেনে আসতে দু’ভাইকে সে অনুরোধ করে। যেতে যেতেই তাদের সঙ্গে দেখা হয় একটি ডুমুর গাছের। লংকা পার হওয়ার কথা শুনে সে আফসোস করে বলে, “আমার এমন সুদৃশ্য ফল পেকে থাকে কিন্তু মানুষ ও পাখি সে দিকে ফিরেও তাকায় না। তোমরা আমার ভাগ্যটিও জেনে এসো।” কিছুদূর যেতেই কারাম আর ধারামের সামনে পড়ে একটি নদী। নদীর তীরে দুটি হাতি মারামারি করছিল। পুরো শরীর তাদের কাদায় ঢাকা। কারাম-ধারামের কথা শুনেই তারা দুঃখ করে বলে, “আমরা নিজেরা মারামারি করে আর কতকাল কাদায় ঢাকা থাকব? আমাদেরকে কি কেউ গোসল করিয়ে পরিষ্কার করে রাখবে না? তোমরা আমাদের ভাগ্যটিও জেনে এসো।”

নদী পার হয়ে কিছুদূর যেতেই পড়ে লংকা সমুদ্র। বিশাল এ সমুদ্র কারাম-ধারাম পার হবে কিভাবে?

সমুদ্রে ছিল বড় একটি কুমির। সাতদিন আগে তার গলায় বিঁধেছে আড় মাছের কাঁটা। যন্ত্রণায় তার ঘুম হারাম। সে কারাম-ধারামের সাহায্য চাইল। সমুদ্র পার করা ও নিয়ে আসার শর্তে দুইভাই কুমিরের গলার কাঁটা বের করে দিল। অতঃপর কুমিরের পিঠে চড়ে লংকা সমুদ্র পার হতেই দেখা মিলল কর্মভাগ্যের। সারা শরীর তার পোকায় খাচ্ছিল। কারাম-ধারাম স্পর্শ করতেই সেটি গাছ হয়ে গেল। দুইভাইয়ের মনে তখন অন্যরকম শক্তি। তারা সেটি ঘাড়ে তুলে বাড়ির দিকে রওনা দিল। চলতি পথেই অন্যদের সমস্যাগুলোর সমাধান দৈবক্রমে তারা পেতে থাকল।

ফেরার পথে হাতি দুটো তাদের ভাগ্যের কথা জানতে চাইলে, কারাম-ধারাম বলল, “তোমাদের এমন একজন লাগবে যে শরীর পরিষ্কার করে দেবে।” শুনেই হাতি দুটি তাদের সঙ্গে নেওয়ার মিনতি করে। দুইভাই তখন দুই হাতির পিঠে চড়ে বসে। এরপর ডুমুর গাছ তার ভাগ্যের কথা জানতে চাইলে, তারা বলে, “তোমার গোড়ার মাটির নিচে সাত কলসি ধন আছে। সেটি সরালেই তোমার ফল সবাই খাবে।” ডুমুর গাছ কারাম-ধারামকে তা তুলে নেয়ার অনুরোধ করে। তারা তখন সাত কলস ধন হাতির পিঠে তুলে নেয়। কুল গাছের সঙ্গে দেখা হতেই কারাম-ধারাম তাকেও একই কথা বলে। সেও মাটির নিচের সাত কলস ধন তুলে নেয়ার মিনতি করে।

এভাবে দুইভাই কর্মভাগ্য নিয়ে আসে ওই বটগাছটির কাছে। বটগাছ কর্মভাগ্যরূপী ওই গাছটিকে মাটিতে গেড়ে তাদের বোন পারাবেতীকে দিয়ে পূজা করার নির্দেশ দেয়। তারা তাই করে। কড়াদের বিশ্বাস, সে সময় থেকেই অভাব থেকে মুক্তি ও সৌভাগ্য লাভের আশায় মানুষেরা কারমা উৎসব পালন করে আসছে।

কড়াদের কারমা পূজা সাঁওতালদের কাছে ‘কারাম উৎসব’। মূলভাব ঠিক থাকলেও কারামপুরাণের গদ্যটি বেশ অন্যরকম।

যমজ দুই ভাই কার্মু ও ধার্মু। কার্মু বড়। ধার্মু ছোট। তাদের বয়স যখন দশ তখন তাদের বাবা মারা যায়। ফলে চরম দারিদ্র্য নেমে আসে পরিবারটিতে। দুইভাই তখন ভিক্ষা করে জীবন চালায়। একদিন তারা ভিক্ষা করতে যায় চাম্পাগড় ও চায়নগরে। সেদিন প্রখর রোদ ছিল। ফলে দুই ভাই বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়ে। চাম্পাগড়ের খুব কাছেই একটি নদী। নদীর ধারে ছিল একটি কদমগাছ। ক্লান্ত ধার্মু গা এলিয়ে দিল সে গাছের ছায়াতলে।

ঘুমের মধ্যে তাকে দেখা দেন ‘কারাম গোসাঁই’।

বললেন, “ওহে ধার্মু, কতদিন আর এভাবে ভিক্ষা করবে। কারামা গাছের ডাল পুঁতে কারামপাতার মাদল তৈরি করো, তিনবার গড় হয়ে তা প্রণাম করো এবং ওই ডালের চারদিকে ঘুরে ঘুরে নাচতে থাক।” আরো বললেন, “কদম গাছের নিকট আছে একটি গাভী। পাথরের চাতালে বেনাঘাসের মাঠে আছে মাথায় বাঁধার একখানা কাপড়। আর নদীর ধারের ডুংরীতে বাঁশের ঝাড়ে রাখা আছে একটি বাঁশি। সেগুলো তুমি নিয়ে যাও আর প্রতিদিন নদীর ধারে এসে কারামডাল পুঁতে আমাকে পূজা দাও। তাহলে আমি তোমাদের অনেক বেশি বেশি ধন দেব।”

ঘুম ভাঙতেই ধার্মু দেখল নদীর ধারে সত্যিই একটি কারাম গাছ। স্বপ্নে পাওয়া নির্দেশ মতোই সে ওই গাছের ডাল ভেঙে মাটিতে পুঁতে তিনবার গড় হয়ে প্রণাম ও নমস্কার করে। অতঃপর চারদিকে ঘুরে ঘুরে নাচতে থাকে। হঠাৎ সে দেখল তার কাছে চলে এসেছে একটি গাই গরু। গাইটিকে সঙ্গে নিয়ে, ডুংরীর বাঁশের ঝাড় থেকে বাঁশি নামিয়ে, বেনাঘাসের ওপর থেকে পাওয়া কাপড় দিয়ে মাথায় পাগড়ি বেঁধে, সে ফিরল বাড়িতে।

এভাবেই ধার্মু প্রতিদিন নদীর পাড়ে এসে কারাম গাছের ডাল পুঁতে প্রণাম করে আর চারপাশে ঘুরে ঘুরে কারাম গোঁসাইকে স্মরণ করে। সঙ্গে থাকে ওই বাঁশি আর পাগড়ি। এতে দিনে দিনে তার গরু বাছুরের সংখ্যা যায় বেড়ে। সে হয় সম্পদশালী।

একবার ভাই কার্মু ছোটভাইয়ের রাখালি দেখতে গেল মাঠে। আড়ালে দাঁড়িয়ে সে দেখল, ধার্মু নদীর ধারে কারামডাল পুঁতে কারামপাতার মাদল মাথায় নিয়ে ঘুরে ঘুরে নাচছে। আর তার দিকে তাকিয়ে আছে একটি গাই গরু। এ দৃশ্য দেখে কার্মুর হিংসে হলো। বাঁ হাত দিয়ে সে ওই কারামডালটি উপড়ে ফেলল। অতঃপর ডালটিকে নিক্ষেপ করল নদীর জলে।

ওই ঘটনার পর থেকে তাদের জমিতে ধান হলো না। গরু-বাছুরগুলোও গেল মরে। ফলে তারা ধীরে ধীরে আবারও দরিদ্র হয়ে পড়ল।

সে সময় দুইভাই গেল ধান রোপণের কাজে এক ধনীর বাড়িতে। কাজের ফাঁকে সবাইকে মুড়ি খেতে দেওয়া হলো। কিন্তু অন্যদের দিতে দিতেই মুড়ি শেষ হয়ে গেল। ফলে নাওয়া-খাওয়া ছাড়াই কার্মু ও ধার্মু দিনভর ধান রোপণ করল। শেষে গেল মজুরী আনতে। কিন্তু এবারও ঘটল একই ঘটনা। অন্যদের দিতে দিতেই টাকা গেল ফুরিয়ে। দুইভাই বড়ই কষ্ট পেল।

“মজুরী না পেলে আমাদের লাগানো চারা সব তুলে নেব”—এমন সিদ্ধান্ত নিয়েই তারা মাঠের দিকে ছুটল। সে সময় পথে তাদের দেখা হলো এক বৃদ্ধের সঙ্গে। সব শুনে তিনি বললেন, “কারাম গোসাঁইকে বাঁহাত দিয়ে ভাসিয়ে দেওয়ার জন্যই তোমাদের এত কষ্ট।” তিনি কার্মু ও ধার্মুকে নির্দেশ দিয়ে বললেন, “জালাপুরী দ্বীপের চন্দন জঙ্গলে পাবে কারাম গোসাঁইকে। আজই তাঁকে খুঁজে আনো। নইলে সপরিবারে অনাহারে মরবে।” কথাগুলো বলেই ওই বৃদ্ধ অদৃশ্য হয়ে গেল।

দুইভাই তখন নিজেদের ভুল বুঝতে পারল। পেটে ক্ষিদে নিয়ে তারা কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে পড়ল কারাম গোসাঁইয়ের খোঁজে।

যেতে যেতে তারা পৌঁছাল উজারডি গ্রামে। সেখানকার এক কাঁঠাল গাছের নিচে বিশ্রাম নিচ্ছিল কার্মু ও ধার্মু। হঠাৎ কাঁঠাল গাছটি তাদের প্রশ্ন করল, “তোমরা কোথায় যাচ্ছো হে?”
জবাবে ধার্মু বলল, “আমরা কারাম গোসাঁইকে খুঁজতে যাচ্ছি।”
শুনে, কাঁঠাল গাছ অনুরোধ করে বলল, “এ গাছের নিচে বহুদিন ধরে যে টাকা পোঁতা আছে, আমি আর সেই টাকা দেখাশোনা করতে পারব না। কারাম গোসাঁইয়ের দেখা পেলে আমার কথাটাও একটু বলো।”

সেখান থেকে দুইভাই এলো ঝলদা গ্রামে। সে গ্রামে ছিল এক ধনী লোক। তিনি কার্মু ও ধার্মুকে জিজ্ঞেস করেন, “তোমরা কোথায় যাও ভাই?” উত্তর শুনে লোকটি বিনয়ের সঙ্গে বলল, “আমি আর ধন জমিয়ে রাখতে পারছি না। তোমরা আমার কথাটিও তাঁকে বলে দিও।”

দুইভাইয়ের পেটে খিদে। অথচ ওই গ্রামেও তারা পেল না কোনো খাবার। ক্ষুধার জ্বালায় কাঁদতে কাঁদতে তারা এলো অযোদিয়া গ্রামে। এ গ্রামে ছিল এক ধনী গোয়াল। তার সঙ্গে দেখা হতেই তিনি প্রশ্ন করেন, “তোমরা কোথায় যাচ্ছো হে?” কার্মু ও ধার্মুর জবাব শুনে তিনি অনুরোধ করে বলেন, “কারাম গোসাঁইকে বলে দিও, আমি আর বেশি গরু গোয়ালে রাখতে পারছি না। তাদের গোবর ফেলতে ফেলতে আমি অতীষ্ট হয়ে উঠছি। এত গরু পোষা আর সম্ভব নয়।”

কিছু দূর যেতেই পথে পড়ল খরস্রোতা গাংনদী। সে নদীর একটি রাঘব বোয়াল মাছ কার্মু ও ধার্মুকে জিজ্ঞেস করল, “কোথায় যাওয়া হচ্ছে ভাই।” তাদের উত্তর শুনে বোয়াল মাছ দুঃখ করে বলে, “এ জন্মে আমি অনেক কষ্ট পেয়েছি। আমার আর বাঁচতে ইচ্ছে করছে না। আমার যেন তাড়াতাড়ি মরণ হয়। কারাম গোসাঁইয়ের দেখা পেলে তাঁকে আমার কথাটিও বলো।”

দুইভাই সেখান থেকে এলো জালাপুরী সাগরের কাছে। বিশাল ও উত্তাল সাগর তারা কিভাবে পার হবে? এই ভেবে কার্মু ও ধার্মু সাগরপাড়ে বসেই কাঁদতে থাকে।

তাদের কান্না শুনে সাগরপাড়ে আসে এক কুমির। সব শুনে কুমির তাদের জালাপুরী পার করিয়ে দিতে রাজি হয়। কার্মু ও ধার্মু তখন কুমিরের পিঠে চড়ে বসে। যেতে যেতে কুমির বলে তার দুঃখের কথাটি, “আমি কোনো কিছু ধরতে গেলেই তা পালিয়ে যায়। কারাম গোসাঁইকে একটু বলো, আমার শিকার যেন আর মুখ থেকে ফসকে যেতে না পারে।”

জালাপুরী পার হয়ে কার্মু ও ধার্মু পৌঁছে গেল চন্দন পাহাড়ের বনে। সেখানে সোনার সিংহাসনে বসে ছিলেন কারাম গোসাঁই। ক্ষুধার্ত দুইভাইকে দেখে তার দয়া হলো। প্রথমেই কারাম গোসাঁই তাদের সুমিষ্ট ফল খেতে দিলেন। অতঃপর তিনি অবশ্যই তাদের কাছে ফিরে যাবেন—এমন প্রতিশ্রুতি দিলেন দুইভাইকে।

কারাম গোসাঁইয়ের উদ্দেশ্যে কার্মু ও ধার্মু একে একে বলেন কাঁঠাল গাছ, গোয়ালা, ধনী লোক, রাঘব বোয়াল ও কুমিরের মিনতিগুলো।

সব শুনে কাঁঠাল গাছের বিষয়ে কারাম গোসাঁই বলেন, “পুঁতে রাখা ওই টাকাগুলো তোমাদের। তোমরা সঙ্গে করে নিয়ে যেও।” গোয়ালার কথা উঠতেই বললেন, “তাকে বলে দিও, আর একবার গরুর গোয়ালে ঝাঁটা দিয়ে পরিষ্কার করে সে যেন চলে যায়। ফেরার পথে ওই গরুগুলো তোমরাই নিয়ে যেও।”

ধনী লোকের আকুতির উত্তরে কারাম গোসাঁই বলেন, “ওকে বলে দিও, উনুনে ভাতের এটো ঢুকিয়ে আর ভাতের হাড়িতে ভাত বসিয়ে জ্বালানি কাঠ যেন পা দিয়ে ঠেলে দেয়। আর তার সব ধন তোমাদের দিলাম।”

রাঘব বোয়ালের বিষয়ে তিনি বলেন, “তোমরা তাকে বলে দিও, সে শীঘ্রই মাঝনদীতে মারা যাবে। তার আর কোনো দুঃখ-কষ্ট থাকবে না।”

সবশেষে দুইভাই জানাল জালাপুরীর কুমিরের দুঃখের কথা। শুনে কারাম গোসাঁই কার্মু ও ধার্মুকে বলেন, “তাকে বলে দিও, আজ থেকে কোনোকিছু সে ধরতে গেলে তা আর পালাতে পারবে না। সে হবে জালাপুরীর রাজা।”

কারাম গোসাঁইয়ের নির্দেশগুলো পথে পথে সবাইকে বলে দুইভাই ফিরল বাড়িতে। সঙ্গে আনলো টাকা-পয়সা, ধনসম্পদ আর গরু-বাছুর। এভাবে তারা আবার সম্পদশালী হয়ে উঠল এবং কারাম গোসাঁইয়ের আশির্বাদে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে থাকল। এ ঘটনার পর থেকেই সাঁওতালরা কারাম উৎসব পালন করে আসছে।

কারমা বা কারাম উৎসব নিয়ে এরকম অসংখ্য গদ্য গথিত আছে বিভিন্ন আদিবাসী মানুষদের মনের অতলে। বিশ্বাসের এই মিথগুলোই যুগে যুগে টিকিয়ে রেখেছে আদিবাসী সংস্কৃতিকে। পরিবর্তনের হাওয়ায় উৎসবের ধরন খানিকটা বদলে গেলেও উৎসবের পেছনের গদ্যগুলো আজও রয়ে গেছে আদি ও অকৃত্রিম।

লিখাটি প্রকাশিত হয়েছে বাংলানিউজ২৪.কমে, বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৫

WARNING:
www.salekkhokon.me-এ-এ প্রকাশিত কোনও তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

© 2015 – 2018, https:.

এই ওয়েবসাইটটি কপিরাইট আইনে নিবন্ধিত। নিবন্ধন নং: 14864-copr । সাইটটিতে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো তথ্য, সংবাদ, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Show More

Salek Khokon

সালেক খোকনের জন্ম ঢাকায়। পৈতৃক ভিটে ঢাকার বাড্ডা থানাধীন বড় বেরাইদে। কিন্তু তাঁর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ঢাকার কাফরুলে। ঢাকা শহরেই বেড়ে ওঠা, শিক্ষা ও কর্মজীবন। ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর। ছোটবেলা থেকেই ঝোঁক সংস্কৃতির প্রতি। নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। যুক্ত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও থিয়েটারের সঙ্গেও। তাঁর রচিত ‘যুদ্ধদিনের গদ্য ও প্রামাণ্য’ গ্রন্থটি ২০১৫ সালে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক মৌলিক গবেষণা গ্রন্থ হিসেবে ‘কালি ও কলম’পুরস্কার লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী ও ভ্রমণবিষয়ক লেখায় আগ্রহ বেশি। নিয়মিত লিখছেন দেশের প্রথম সারির দৈনিক, সাপ্তাহিক, ব্লগ এবং অনলাইন পত্রিকায়। লেখার পাশাপাশি আলোকচিত্রে নানা ঘটনা তুলে আনতে ‘পাঠশালা’ ও ‘কাউন্টার ফটো’ থেকে সমাপ্ত করেছেন ফটোগ্রাফির বিশেষ কোর্স। স্বপ্ন দেখেন মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী এবং দেশের কৃষ্টি নিয়ে ভিন্ন ধরনের তথ্য ও গবেষণামূলক কাজ করার। সহধর্মিণী তানিয়া আক্তার মিমি এবং দুই মেয়ে পৃথা প্রণোদনা ও আদিবা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back to top button